শ্রুতির শ্রুতিনন্দন সংগীত সন্ধ্যা

অলোক আচার্য নিউবারাকপুর:

 

শ্রুতি। সঙ্গীত শিক্ষা কেন্দ্র। নামের মধ্যে রয়েছে একটা আন্তরিকতা ও সুর তালের মাধুর্য। উত্তর ২৪ পরগণা জেলার নিউবারাকপুরের বহুমুখী সঙ্গীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ঘরানার ভজন,ঠুংরি,গজল,টপ্পা সহ রবীন্দ্র নজরুল অতুলপ্রসাদ রজনীকান্ত দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গান শেখান সঙ্গীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা ও কন্ঠশিল্পী শ্রাবনী ঘোষ। অন্যান্য সঙ্গীতের তুলনায় কম চর্চিত ও প্রচারিত অতুলপ্রসাদী,রজনীকান্তের গান ও দ্বিজেন্দ্রগীতি সমৃদ্ধ সঙ্গীতকে সকলের মাঝে পৌছে দেবার উদ্দশ্যেই শ্রুতির চুতুর্থ বার্ষিক সাংস্কৃতিক সংগীত সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হল শনিবার সন্ধ্যায় স্হানীয় রামকৃষ্ণ পাঠাগার মঞ্চে। শ্রুতিনন্দন সংগীত সন্ধ্যায় শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করেন রজনীকান্ত অতুলপ্রসাদ ও দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ভিন্ন পর্যায়ের (স্বদেশ প্রেম,ভক্তিমূলক,প্রীতিমূলক,হাস্যরসাত্মক,প্রেম,পূজা,প্রকৃতি)পুরনো দিনের একক ও সন্মেলক সংগীত।
শুরুতে প্রবাদপ্রতিম সংগীত শিল্পী প্রয়াত অমর পালের স্মরণে শিল্পী দীপান্বিতা বিশ্বাসের সুরেলা কন্ঠে লোকগীতি 'কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায় ও ভাই রে... ' বেশ ভাল পরিবেশন। রজনীকান্তের স্বদেশ প্রেম 'মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নে রে ভাই... 'এবং অতুলপ্রসাদের জনপ্রিয় সংগীত 'মোদের গরব মোদের আশা.. ' শিক্ষার্থীদের উপস্হাপনা ছিল বেশ সাবলীল। অর্নব সরকারের কন্ঠে দ্বিজেন্দ্রগীতি 'ওই মহাসিন্ধুর ওপার হতে কি সঙ্গীত ভেসে আসে.. ' ভারী সুন্দর। মায়া দত্তের কন্ঠে রজনীকান্তের গান 'যদি প্রলোভন মাঝে ফেলে.. ' নম্রতা অধিকারীর কন্ঠে রজনীকান্তের জনপ্রিয় সংগীত আমি অকৃতি অধম.. ' পরিবেশন দশর্কদের মুগ্ধ করে। শিল্পী তনিমা রায়ের কন্ঠে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গান 'আজি নূতন ভূষণে.. 'বেশ চমৎকার পরিবেশন। শিল্পী দিশা হালদারের কন্ঠে রজনীকান্তের গান 'আমি দেখেছি জীবনভোরে চাহিয়া.. 'অন্য মাত্রা ত্রনে দিয়েছিল।মীনাক্ষী দাশের কন্ঠে অতুলপ্রসাদী ভক্তিগীতি 'কে তুমি বসি নদীকূলে একেলা.. 'এবং অলিভা মন্ডলের সুরেলা কন্ঠে দ্বিজেন্দ্রগীতি 'একি মধুর ছন্দ মধুর গন্ধ.. 'পরিবেশন ছিল বেশ সাবলীল। শেষে সংগীত সন্ধ্যার মুখ্য আকর্ষণ শিক্ষাকেন্দ্রের অধ্যক্ষা প্রথতিযশা কন্ঠশিল্পী শ্রাবনী ঘোষের সুরেলা কন্ঠে অতুলপ্রসাদ ও রজনীকান্তের দুটি গান দর্শকদের মুগ্ধ করে। অতুলপ্রসাদের,আমার পরান কোথায় যায়.. 'এবং রজনীকান্তের জনপ্রিয় ও মা কোলের ছেলে ধুলো ঝেড়ে তুলে নে কোলে.. বেশ ভাল উপস্হাপনা। এছাড়াও একক সংগীতে উল্লেখযোগ্য দের মধ্যে ছিলেন অয়ন্তিকা নাগ,পূর্নিমা সাহা,দোলা দেবনাথ,সোমা রায়,অয়ন্তিকা বিশ্বাস,রেখা সরকার,বেবী বনিক,তমালী রায় প্রমুখ। শিল্পীদের সঙ্গে যন্ত্রানুসঙ্গতে ছিলেন (কী-বোর্ড) তমাল সরকার,(তবলা ওশ্রীখোল) সত্যজিৎ সরকার,(এফেক্ট)মাণিক দাশ, এবং গীটারে গনেশ রায়। প্রদীপ প্রজ্বলন করে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন শব্দের ঝংকার ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক সুনিল মুখোপাধ্যায়। উপস্হিত ছিলেন আইনজীবী (বর্ধমান আদালত )দীপঙ্কর বিশ্বাস,স্হানীয় পৌরসভার পুরদলনেতা ও সাংস্কৃতিক কর্মী প্রবীর সাহা। উদ্বোধক ও অতিথিদের উত্তরীয় পুষ্পস্তবক ও ব্যাজ পরিয়ে সন্মানিত করেন সংগীত শিক্ষা কেন্দ্রের অধ্যক্ষা কন্ঠশিল্পী শ্রাবনী ঘোষ।ক্ষুদ্র অনাড়ম্বর সংগীত সন্ধ্যায় এলাকার বিভিন্ন গুনিজন ও সাংস্কৃতিক কর্মীরাও উপস্হিত ছিলেন। দক্ষতার সাথে সঞ্চালনায় দায়িত্বে ছিলেন শিল্পী অন্বেষা মুখার্জী ঘোষ।