দেগঙ্গায় ডেঙ্গু সচেতনতায় পুরমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রী।

সঞ্জয় সাহা।

বিগত ২০১৭ সালে ডেঙ্গু ও অজানা জ্বরে গোটা দেগঙ্গা জুড়ে মহামারী আকার ধারণ করেছিল। সেই অজানা ও ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় দুইশত উপরে মানুষের। অবশেষে প্রশাসনের পদক্ষেপে দেগঙ্গা থেকে সেই মহামারীকে সেবারের মতো রক্ষা করা গেছিল।২০১৮ সাল পড়তেই দেগঙ্গাতে আবারো দেখা দেয় ভয়াবহ ডেঙ্গু জ্বর ভাইরাল জ্বর। ইতিমধ্যেই অজানা জ্বরে আক্রান্ত দেগঙ্গার হাজারেরও বেশি মানুষ। গত দুমাস আগে দেগঙ্গাতে ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যু হয় এক স্কুল শিক্ষিকার। কিভাবে দেগঙ্গা থেকে ডেঙ্গু মুক্ত করা যাবে সেই উদ্দেশ্য নিয়ে দেগঙ্গা ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছিল যার ফলে গতবারের তুলনায় এবারে ডেঙ্গুর হাত থেকে মৃতের সংখ্যা অনেকটাই কম। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মুহূর্তে রয়েছেন বিদেশ সফরে। তা সত্ত্বেও তিনি ইতালির মিলান থেকে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী ও পুরো ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে নির্দেশ দেন দেগঙ্গা থেকে “নির্মল উত্তর ও পতঙ্গ বাহিত রোগের সদুত্তর” নামে একটি কর্মসূচি আয়োজন করতে। সেই উদ্দেশ্যে বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা বিনাপানি বালিকা বিদ্যালয় এর মাঠে “নির্মল উত্তর ও পতঙ্গ বাহিত রোগের সদুত্তর” নামে একটি জনসভার আয়োজন করা হয়। এই জনসভা উপস্থিত ছিল দেগঙ্গা ব্লকের সমস্ত আশা কর্মী, স্বাস্থ্য কর্মী ও কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতাভুক্ত সমস্ত স্কুলের ছাত্রীরা।

 

এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজ্যের পুরো ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ, বারাসাতের সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, উত্তর ২৪ পরগনা জেলাশাসক অন্তরা আচার্য, জেলার সভাধিপতি রেহেনা বিবি, হাড়োয়া বিধানসভার বিধায়ক হাজী নুরুল ইসলাম, দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা মন্ডল, দেগঙ্গা ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক অনিন্দ্য ভট্টাচার্য, দেগঙ্গার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মফিদুল হক সাহাজী, দেগঙ্গার যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আনিসুর রহমান, রাজ্য তৃণমূল মাদ্রাসা টিচার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও দেগঙ্গার ৩৬ নম্বর কেন্দ্রের জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত প্রার্থী একেএম ফরহাদ সহ তৃণমূলের বিশিষ্ট নেতা ও নেতৃত্বরা। কিভাবে ডেঙ্গু থেকে বাংলার মানুষ মুক্তি পাবে সেই উদ্দেশ্যে উপস্থিত বক্তারা ডেঙ্গু সচেতনতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, বিজেপি সারা রাজ্যে ধর্মঘাট ডেকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে। তার মধ্যেও বিজেপির ডাকা ধর্মঘাটকে ত্বরান্বিত করে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আজকের এই দেগঙ্গাতে ডেঙ্গু সচেতনতা মূলক কর্মসূচির আয়োজন করা হলো। এই কর্মসূচিতে দেগঙ্গা ব্লক এর সমস্ত পঞ্চায়েতের প্রধানরা, দেগঙ্গা ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক সহ স্কুল কলেজের শিক্ষকরা সমস্ত কিছুর পাশাপাশি প্রতিদিন ১ ঘন্টা করে ডেঙ্গু নিয়ে আলোচনা করবে। অর্থাৎ দেগঙ্গা সহ বাংলাকে নির্মল বাংলা হিসাবে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা আজকের এই অনুষ্ঠান থেকে আমাদের পদযাত্রা শুরু হল। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, বিজেপি সারা বাংলায় ১২ ঘণ্টা বন্ধ ডেকে সফল করতে পারিনি। বিজেপি বন্ধ ডাকলেও তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে তা বানচাল করেছে। গত বছর দেগঙ্গাতে মহামারী আকার ধারণ করেছিল সেই উদ্দেশ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গোটা জেলা ও রাজ্য থেকে কিভাবে ডেঙ্গু মুক্ত করে বাংলাকে নির্মল বাংলা হিসেবে গড়ে তোলা যায় তার শপথ গ্রহণ বা পদযাত্রা আজ থেকে শুরু হল। এদিনের এই কর্মসূচির আকর্ষণীয় বিষয় ছিল, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, নির্মল ঘোষ, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা মন্ডল, একে এম ফরহাদ সহ তৃণমূলের বিশিষ্ট নেতা ও নেতৃত্বরা ঝাড়ু নিয়ে বিনাপানি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে টাকি রোডের উপরে ঝাড়ু দিতে দিতে ২০০ মিটার পায়ে হেঁটে পদযাত্রা করেন। এই পথ যাত্রা শেষে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, আজ দেগঙ্গা থেকে যে কর্মসূচি শুরু হলো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আগামী দিনে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে ব্লকে ও পঞ্চায়েতে এই কর্মসূচি পালিত হবে। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য বাংলা কে বিশ্বের দরবারে স্বচ্ছ নির্মল বাংলা হিসাবে আগামী দিনে তুলে ধরা।