
ছিনতাইবাজ নয় , পলতায় খুনের নেপথ্যে স্বামীই । উদ্দেশ্য ফ্ল্যাট হাতানো ।
( বিজ্ঞাপন ।)
অচিন্ত্য চক্রবর্তী ।
পলতা ঘোষপাড়া রোডের খুনের কিনারা ২৪ ঘন্টার মধ্যেই করে ফেলল নোয়াপাড়া থানার পুলিশ । গতকাল রাত ৯ - ৩০ মিনিট নাগাদ পলতা ঘোষপাড়া রোডে এক মহিলাকে গুলি করে খুন করা হয় । ঘটনাস্থলে ঐ মহিলার সঙ্গী তার স্বামী বলেন তারা বাইক কিনতে এসেছিলেন, ট্রেনে করে পলতা স্টেশনে নেমে ঘোষপাড়া রোড ধরে বিভিন্ন পুরানো বাইক কেনাবেচার দোকান ঘুরে দেখার সময় হঠাৎ করেই হাঁটতে হাঁটতে তার স্ত্রী একটু পিছিয়ে পড়ে সেই সময় হঠাৎ গুলির আওয়াজ শুনে ঘুরে দেখে হেলমেট পরে বাইক নিয়ে দুজন পালিয়ে যাচ্ছে ।
নোয়াপাড়া থানার হাতে গ্রেফতার সুখদেব (লাল গেঞ্জি)
এই সময় স্বামীর চোঁখে জল নেই অথচ অসম্ভব কান্নাকাটি এবং প্রলাপ বকা দেখে নোয়াপাড়া পুলিশের তদন্তকারী অফিসারের সন্দেহ হয় । তারা স্বামী কে আটক করে জেরা করা শুরু করে । রাত বাড়ে পুলিশি জেরার পারদও বাড়ে । তখনই গলগল করে স্বামীর মুখ থেকে সমস্ত ঘটনার আসল তথ্য উঠে আসে ।
নোয়াপাড়া থানা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায় মৃত মহিলার নাম রাজশ্রী চ্যাটার্জি, তার বাবা দেবী দাস চ্যাটার্জি পুলিশের ডিএসপি হিসেবে কর্মরত ছিলেন, বারাকপুরের আনান্দপুরি মিডিল রোড অঞ্চলে তার দিদি ও বাবার সাথে থাকার সময় ঐ এলাকারই সুখদেব সিং আদতে পাঞ্জাবের বাসিন্দা ঐ এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকত , তার সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরী হয় । বছর ছয়েক ভালোবাসার পর তাদের বিয়ে হয় । বিয়ের পরই বোঝা যায় ফুটানি থাকলেও সুখদেব কার্যত বেকার । এই সময় সরকারি কর্মচারী দিদি প্রতি মাসেই আর্থিক সাহায্য করত । এভাবে চলার পরই সুখদেব বিভিন্ন ভাবে পৈতৃক বাড়ি বিক্রির জন্য চাপ দিতে থাকে । প্রাথমিকে রাজশ্রীর বিবাহিত দিদি দেবশ্রীর বাড়ি বিক্রিতে সায় না থাকলেও বোনের লাগাতার চাপের জন্য বাড়ি বিক্রিতে সায় দেন । অধিকাংশ টাকাই রাজশ্রী ও সুখদেবকে দিয়ে দেওয়া হয় । এই টাকায় রাজশ্রী ও সুখদেব মিলে একটি ফ্ল্যাট ও গাড়ি কেনে ।
রাজশ্রী চ্যাটার্জি ।
রোজগার না থাকায় কিছু দিনের মধ্যে গাড়িও বিক্রি করে দিতে হয় । সময়ের সাথে সাথে সুখদেবের প্রতি মোহ ভঙ্গ হয় রাজশ্রীর । সে অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পরে । বিষয়টি সুখদেবের নজরে আসে , অশান্তি শুরু হয় দুজনের । সুখদেব বুঝতে পারে রাজশ্রী অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পরলে রাজশ্রীর ফ্ল্যাট এবং টাকা দুই ছাড়তে হবে তাকে তাই খুব ঠান্ডা মাথায় প্লান করে রাজশ্রী কে খুন করার পরিকল্পনা করে । তার প্লান ছিল রাজশ্রীকে মারতে পারলেই স্বামী হিসেবে ফ্ল্যাট তার দখলেই থাকবে তাই প্রায় নিখুঁত পরিকল্পনা সেই মতোই ঘোষপাড়া রোডের অন্ধকার নির্জন জায়গা বেছে নেওয়া ।
ঘোষ পাড়া রোডে রাজশ্রীর মৃতদেহ জড়িয়ে সুখদেবের কান্না।
জেরায় সে জানায় গুলি সে নিজেই করে গুলির আওয়াজ শুনে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে ছিনতাই এর গল্প ফাঁদে । তবে চোঁখে জল ছাড়া কান্নার আওয়াজ একটু বেশি হওয়ায় ধরা পরে গেল সুখদেব । কিনারা হল হাড় হিম করা এই খুনে