সন্ত্রাস বিধ্বস্ত আমডাঙার দায়িত্ব নিতে অঙ্গীকার অভিষেকের ।
সঞ্জয় সাহা, আমডাঙা
আমডাঙ্গার দায়িত্ব এবার নিজের কাধেই তুলে নিলেন রাজ্য তৃনমুলের যুব সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জী। বৃহস্পতিবার আমডাঙ্গার বহিসগাছি এলাকায় সভা মঞ্চ থেকেই আমডাঙ্গার দায়ীত্ব নেওয়ার কথা ঘোষনা করেই সিপিএম এবং বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন এবার বুঝিয়ে দেব কত ধানে কত চাল হয়। অভিষেক বলেন আমডাঙ্গা থেকে সপ্তমী শুরু করলাম । বিসর্জন দেব দিল্লিতে । তৃনমুলের যুব সভাপতির এই বক্তব্য শুনে তৃনমুল কর্মীরা মনে করছেন এর মধ্য দিয়ে তিনি যেমন আমডাঙ্গার মাটিতে সিপিএমের সন্ত্রাসের মোকাবিলা করলেন , তেমনি আগামী ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করারও ইঙ্গিত দিলেন আমডাঙ্গার প্রতিবাদের মঞ্চ থেকেই ।
তাড়াবেড়িয়া পঞ্চায়েতের গঠন নিয়ে সিপিএম এবং তৃণমূলের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছিল আমডাঙ্গার বহিসগাছি ,বড়গাছা সহ তাড়াবেড়িয়া এলাকা। দুই পক্ষের বোমা গুলির লড়াইয়ে নাসির হালদার এবং কুদ্দুস গানি খুন হয়েছিল । সিপিএম কর্মী মোজাফফর আহমেদ পিয়াদাও খুন হয়েছিলেন।পুলিশ গত দশ দিন ধরে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে প্রচুর বোমা সহ গুলি এবং আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছিল।পুলিশের জালে গ্রেফতার হয়েছে তিরিশ জনেরও বেশী। সিপিএম তৃনমুল দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছিল।আমডাঙ্গা থানার সামনে সিপিএমের প্রতিবাদ সভা আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে পুলিশ করতে দেয় নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার আমডাঙ্গার উপদ্রুত এলাকাতেই মিছিল এবং সভা দুই- ই করল তৃনমুল।এদিন বহিসগাছির গ্রাম থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দুরত্বের তপনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে ধিক্কার মিছিল করে তৃনমুল। মিছিলে হেঁটেছেন অভিষেক ব্যানার্জী , জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক,রথীন ঘোষ,নারায়ন গোস্বামী সহ পার্থ ভৌমিক,দ্বিনেশ ত্রিবেদী, রফিকার রহমান ও নির্মল ঘোষ সহ জেলার অন্যান্য নেতৃত্ব।
আমডাঙ্গায় সন্ত্রাসে সিপিএমকে আক্রমন শানিয়ে অভিষেক বলেন আমডাঙ্গার মাটিতে নেতাই ,নন্দীগ্রামের স্মৃতি উস্কে দিতে চাইছে সিপিএমের সুর্য মিশ্র , বিমান বসু,মহম্মদ সেলিমরা। সন্ত্রাসের মদত দাতা জাকির বুল্লা বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামে মায়ের আচলের তলায় যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেন আমরা তাকে খুজে বের করবই । আমি আমডাঙ্গার দায়ীত্ব নিয়েছি। কি করে বিরোধীদের শায়েস্তা করতে হয় আমি জানি।সিপিএম এবং বিজেপির ক্ষমতা থাকলে মাঠে ময়দানে নামুক।আমি দায়ীত্ব নিয়েছি।বুঝিয়ে দেব কত ধানে কত চাল হয়। মমতা ব্যানার্জী বদলা নয় ,বদলের রাজনিতিতে বিশ্বাসী। তা না হলে এক সপ্তাহের মধ্যে সেলিম , সুর্যদের আমডাঙ্গার রাস্তাতেই বুঝিয়ে দিত তৃনমুল কংগ্রেস। তৃনমুলের যুব সভাপতি বলেন লড়াইটা সিপিএম শুরু করেছে।মনে রাখবেন এই লড়াইয়ের শেষটা তৃনমুল করবে।সিপিএম,কংগ্রেস , বিজেপি যতই এক ছাতায় আসুক না কেন এখানে লড়াই চলবে।
দলিয় নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য করে অভিষেক জানিয়েছেন আমডাঙ্গায় বিচ্ছিন্ন ভাবে আমি বা আমরা মিলে নয়। সিপিএম,বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইটা এক জোট হয়েই আমাদের করতে হবে। লড়াইয়ের পাশাপাশি আমডাঙ্গায় দলের কর্মসুচি বাড়ানোর উপরেও জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলার নেতাদের। তিনি বলেন দলনেত্রীর ব্রিগেড সমাবেশ উপলক্ষে সব জেলাতেই ব্রিগেড নিয়ে প্রস্তুতি সভা হয়। হাজার হাজার তৃনমুল কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে অভিষেক বলেন এবার আমডাঙ্গাতেই প্রস্তুতি সভা হবে ব্রিগেডের। সভার শেষে ' শহিদ' দের উদ্দেশ্যে এক মিনিট নিরবতা পালন করে অভিষেক ব্যানার্জী জানিয়েছেন আমডাঙ্গার ঘটনায় তৃনমুলের দুই জনের দুটি হাতই বোমের আঘাতে উড়ে গেছে । সেই দুই জনকেই কসমেটিক্সের হাত ফিরিয়ে দেব।
- জেলার সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন তাড়াবেড়িয়া , বোদাই সহ মরিচা পঞ্চায়েত এলাকা সন্ত্রাস মুক্ত করব।এই তিন পঞ্চায়েত গঠন করবে তৃনমুল।রাজ্যের উন্নয়নের শরিক হয়ে কেউ যদি আমাদের দিকে আসতে চায় , সেক্ষেত্রে তাদের নিয়েই এই তিন পঞ্চায়েত গঠন করবে তৃনমুল।